xhoti golpo পল্টনের ল কলেজ ২

xhoti golpo. ভেবেছিলো ক্লাস করবে না। কিন্তু কয়েকজন শিক্ষক এতো ভালো ক্লাস করান, নির্জন ক্লাস প্রায় মিসই দেয় না। ক্লাসে সর্বোচ্চ উপস্থিতি ১০-১২ জন। ক্লাস করতে হয় না, এ ধারণা সবার মধ্যেই বদ্ধমূল। প্রতিটা ক্লাসে বাকি এগারোজনের পার্মুটেশন-কম্বিনেশন হয়, কিন্তু নির্জনের উপস্থিতি ধ্রুব। কয়েকটা মেয়েও ক্লাস করে৷ সবাই ওর চেয়ে বয়সে ৩-৪ বছর বড়। আসলে নির্জনই বোধহয় ক্লাসের কনিষ্ঠতম শিক্ষার্থী। বাকিসবাই চাকরি করে, কেউ ব্যবসা করে, কেউ বিবাহিত। সেই একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করার সাথে সাথে ঢুকেছে।

পল্টনের ল কলেজ ১

ফাহমিদাকে ক্লাস শুরুর পর থেকেই দেখেনি কোনদিন নির্জন। অবশ্য ক্লাসে যে ফাহমিদা কোনদিন আসেনি, এটাও হলফ করে বলতে পারবে না ও। মেয়েদের মধ্যে যে কয়েকজন আসে, তাদের মধ্যে অন্তত ৩ জন বোরখা পরেন, তিন জনই বোধহয় মনে করে দেশটা ইরান বা আফগানিস্তান। মুখ দেখা গেলেই মোরাল পুলিশ এসে ওদের মাশা আমিনির মতো মেরে ফেলবে!

xhoti golpo

ওদের মধ্যে কেউ একজন ফাহমিদা হতেই পারে!
ক্লাস শেষ হয় ওদের রাত ন’টায়। ক্লাস শেষ করেই নির্জন নিচের মার্শাল টিটোর দোকানে এসে সিগারেট ধরায়। টিটোকে বলতে হয় না, সিগারট জ্বালাতেই সে হাতে চা ধরিয়ে দেয়।
টিটোর নাম মার্শাল টিটো কে রেখেছে, বেশ অনেকবার জানতে চেয়েও চায়নি নির্জন। কারণ এই প্রশ্ন যখন জেগেছে ওর মনে, তখন ও দোকানের চৌহদ্দিতেই ছিলো না।

আজ মনে পড়ায় জিজ্ঞেস করতে যাবে, তখনই শুনলো, “নির্জন ভাই, কেমন আছেন?”
কণ্ঠটা চেনা। ফাহমিদাকে দেখে নির্জন হাসিমুখে বলল, “এইতো! আপনাকে দেখিনা। আমি তো ভেবেছিলাম, অন্য কলেজে ভর্তি হয়েছেন!”
অবাক হওয়ার গলায় ফাহমিদা বলল, “ওমা! আমি তো নিয়মিতই আসি! শুধু শুক্রবারে অফিস থাকে না, এদিকে আসা হয় না বলে আসি না!” xhoti golpo

নির্জনের ধারণাই ঠিক হবে। বোরখাওয়ালিদের ভিড়ে ও আলাদা করে ফাহমিদাকে চিনতে পারেনি।
“আপনাকে তো আমি কয়েকবার ডাকছিও। পাত্তাই দেন নাই!”
নির্জন দ্রুত বলে, “আরে ছি ছি, এভাবে বলবেন না। পাত্তা দেবো না কেন? আমি শুনতে পাই নাই!”
চা নিলো ফাহমিদাও। বলল, “আপনি নাকি অনেক নাক উঁচু?”

“আমি?”
“হ্যাঁ। শামিমা আপা বলল। উনি নাকি আপনার কাছে পড়ার ব্যাপারে কী জানতে চাইছিলো, আপনি বলছেন, এইটা তো অনেক বেসিক, এইটা বুঝলেন না? উনি তো সবাইকে বলে বেড়াইতেছে, আপনি গর্বিত ঢাবিয়ান। আমাদের পাত্তাই দেন না সেইজন্যে!” xhoti golpo

তার ব্যাপারে যে কেউ এমন ধারণা করতে পারে, এমটা কল্পনাও করতে পারে না নির্জন। তার গর্ব করার মতো আছেই বা কী? না আছে টাকা, না চেহারা, না সে ছাত্র হিসেবে বার্ট্রান্ড রাসেল। তবে লোকে ভাবে কেন এমন!
নির্জন বলে, “আমি জানি না শামিমা আপা কে তবে তাকে যদি এটা বলে থাকি তবে অপমান করার জন্য অবশ্যই বলিনি। তিনি আমার নামে, যাকে বলে আইনের ভাষায় ডিফেমেশন করেছেন!”

ফাহমিদা হেসে বলল, “আচ্ছা, বাদ্দেন। কে কী বললো, এইটা শুনে আপনার লাভ কী!”
“সেটাই!”
নাম্বার বিনিমিয় হলো দুজনের।
ফাহমিদা বলল, “আপনি কি আমাকে দেখে চিনতে পারবেন ক্লাসে? এরপর থেকে?”

নির্জন একটু ভেবে বলল, “মনে হয় না। বোরখা পরলে সবাইকে একরকম লাগে!”
“ও!”, ম্লান শোনাল ফাহমিদার গলা।
নির্জন বলল, “তবে একটা উপায় আছে!”
“কী?” xhoti golpo

“আমার এক বান্ধবী ছিলো ভার্সিটিতে। মানে এখনো আছে, মরে নাই, বন্ধু থেকে শত্রুও হয়ে যায় নাই!”

“হ্যাঁ তো?”

“সেও আপনার মতো হিজাবিনেকাবি। ওকে আমি চিনতে পারি। ওর সাথে এতোবার দেখা হয়েছে ক্লাস করতে গিয়ে যে ওর হাঁটাচলা, হাতপা নড়ানো, ফিগার, চোখ সবই মুখস্ত আমার। তাই চিনি। আপনার ফিগারও যদি দেখি তবে হয়তো চিনতে পারব!”

“ফিগার?”, বিস্মিত ফাহমিদার গলার।

বলল, “সেটা আমাকে বলে দেখবেন কেন? এমনিই তো দেখতে পারেন?”

নির্জন বলল, “এতক্ষণ চেক আউট করার কথা মনে ছিলো না। এখন যেহেতু জিজ্ঞেস করলেন মনে থাকবেন কিনা, তাই মনে হলো। এই একটা উপায় ছাড়া আর তো কোন উপায় নাই!”

“চেক আউট?” xhoti golpo

নির্জন অনুতপ্ত হয়ে বলল, “চেক আউট না আসলে। মানে ভালো করে দেখতে হবে আরকি আপনাকে!”

“বুঝলাম!”

আজ চায়ের বিল দিল ফাহমিদাই।

“আপনি কি আশেপাশেই থাকেন?”, জিজ্ঞেস করে নির্জন।

“হ্যাঁ। মিতিঝিলে। আপনি তো হলে থাকেন, না?”

“কোন হল?”

হলের নাম বলে নির্জন।

“লেখাপড়া শেষ। এখনও হল ছাড়তেছেন না। আপনার জন্য জুনিয়ররা সিট পাচ্ছে না!”, বলল ফাহমিদা স্বাভাবিক গলাতেই।

লজ্জা পেল নির্জন। বলল, “যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ। আমি তো সিট পেয়েছি থার্ড ইয়ারের মাঝামাঝিতে। আমার কোটা কি পূর্ণ হলো? আমার তো ৫ বছর হলের রুমে থাকার কথা। মাত্র ৩ বছর কেন থাকব তবে? ফার্স্ট সেকেন্ড ইয়ারে আমিও ভাবতাম, শেষ হলেই হল ছেড়ে দেব। এখন বুঝি, আসলে লেখাপড়া শেষ হলেই আসল জার্নি শুরু হয়। হল না ছাড়ার কারণে যেসব বড় ভাইকে গালাগালি করতাম, আমিই আজ সেসব বড়ভাই হয়ে গেছি, দুর্ভাগ্যক্রমে!” xhoti golpo

কথা বলতে বলতে পল্টন মোড়ে চলে এলো ওরা। বাসের হর্ন, চিৎকার, ধাক্কাধাক্কি।

এখান থেকেই রিক্সা নেবে ফাহমিদা।

হঠাৎ ও বলল, “দেখা হইছে?”

বুঝতে পারলো না নির্জন। বলল, “কী দেখা হবে?”

“আমাকে দেখা হইছে আপনার? এখন চিনতে পারবেন?”

হাসল নির্জন। দেখেছে ও ফাহমিদাকে। ওর বলিষ্ঠ পদক্ষেপে, হাঁটার স্টাইল, নড়াচড়া খেয়াল করেছে ও। ফাহমিদার স্তনের কম্পন পর্যন্ত নজর এড়ায়নি। ও এর মধ্যেই চোখ দিয়ে মেপে নিয়েছে ফাহমিদার কোমরের বেড়।

বলল, “হ্যাঁ। পারবো। তবে পেছন থেকে চিনতে পারবো না!”

ফাহমিদা বলল, “তাই নাকি? কেন?” xhoti golpo

নির্জন হেসে বলল, “পেছনটা তো দেখিনি! আপনি আমার সামনে ছিলেনই না কখনও!”

গলায় সার্কাজম এনে ফাহমিদা বলল, “পেছন দিকটা চিনতে হবে কেন?”

“যেন পেছন থেকে ডাকতে পারি?”

“ও!”

লম্বা করে “ও” বলল ফাহমিদা।

তারপর বলল, “আপনি এখানে দাঁড়াবেন। নড়বেন না। আমি ওখান থেকে রিক্সা নেব। আর আপনি আমার পেছন দিকটা মুখস্ত করবেন, ওকে?”

ওকে অবাক করে দিয়ে হাঁটতে লাগলো ফাহমিদা। নির্জন তাকিয়ে রইলো ওর দোদুল্যমান কোমর আর নিতম্বের দিকে। সত্যিই মুখস্ত করে ফেলল ওর নিতম্বের ছন্দ।

রিক্সায় উঠে ওর দিকে তাকিয়ে দুই হাতে একটা ভঙ্গি করলো ফাহমিদা। যার অর্থ “দেখা হলো?” কিংবা “এবার চিনতে পারবেন?” দুটোই হতে পারে। xhoti golpo

শুদ্ধ গিটার নিয়ে এসেছিলো বলে নির্জনকে প্রায় একটা পর্যন্ত থাকতে হলো ছাদেই। শুদ্ধ ফ্লামেনকো বাজায় স্প্যানিশদের মতো, অথচ দাম পাচ্ছে না কোথাও- এই দুঃখ ভাগাভাগি করতে গাঁজা টানলো ওরা কয়েকজন। গাঁজা টানলে সারারাত ওখানেই থাকতে হবে ভেবে ফিরে এলো দুটো টান দিয়েই।

রুমে এসে ওয়াইফাই অন করতেই দেখলো তিনটা ম্যাসেজ। ফাহমিদার।

“ক্লাসে আসেন নাই কেন?”, “আছেন?”, “কথা বলা যাবে?”

ম্যাসেজগুলো পাঠিয়েছে রাত সাড়ে দশটায়। একবার ভাবলো, সরাসরি কল দেবে। কিন্তু সবাই ওর মতো প্যাঁচা নয় ভেবে লিখলো, “ঝামেলায় ছিলাম। আপনি আছেন?”

জবাব এলো সাথে সাথেই।

“কল দেই?”

নির্জন লিখলো, “নির্দ্বিধায়” xhoti golpo

“আমি তো ভাবছি, আপনি রিপ্লাই’ই দেবেন না! সেই কতক্ষণ আগে আপনাকে ম্যাসেজ করছি!”

নির্জন বললো, “বাইরে ছিলাম। কোন দরকার থাকলে ফোনে কল দিতে পারতেন হোয়াটসঅ্যাপের বদলে!”

“দরকার নাই আসলে। এমনিই দিলাম ম্যাসেজ। ভাবলাম জিজ্ঞেস করি কেন আসতেছেন না কলেজে!”

“একটা চাকরির পরীক্ষা ছিলো। সেটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম আরকি। একটা ঝামেলাও ছিলো। আর নিয়মিত ক্লাস তো কেউ করে না। ভাবলাম, আমিই বা করব কেন?”

রিনরিনে গলায় ভেসে এলো ফাহমিদার কণ্ঠ, “কেন? আইন শিখতে আসবেন! আপনা না প্রাকটিস করবেন, লইয়ার হবেন। আইন শিখবেন না?”

“তা অবশ্য ঠিক। ক্লাস করতে হবে। মিস দিতে চাই না আর!”

“ঝামেলার কথা বললেন। কী ঝামেলা?”

“ওসব ছোটখাটো ব্যাপার। আপনার কী খবর?”

“আমি ভালোই আছি। মন খারাপ নাই। সুতরাং ভালোই আছি বলতে হবে!”, বলল ফাহমিদা। xhoti golpo

“আপনার কি বেশিরভাগ সময় মন খারাপ থাকে নাকি?”

“তা থাকে না। কিন্ত থাকে মাঝেমাঝে!”

“কেন?”

“এমনিই। বোধহয় এটা মেয়েদের স্বভাব। আকারণ মন খারাপ করাটা। না হইলে মন খারাপ কেন হবে? সবই তো ঠিকঠাক চলছে!”

নির্জন বলল, “জেনারেলাইজ করাটা বোধহয় ঠিক হলো না। আমি অনেক মেয়েকে চিনি যাদের মন এমন অকারণে খারাপ হয় না!”

“অনেক মেয়ে? বাহ! ভালোই তো। খুব আনন্দে আছেন তবে!”

“আনন্দে আছি, তবে অনেক মেয়েকে চিনি জন্যে না। আর কোন ছেলেটাই বা অনেক মেয়েকে চেনে না? যার কোনদিন প্রেমিকা ছিলো না, তারও মা, বোন, বান্ধবী আছে!” xhoti golpo

“আচ্ছা বুঝলাম, সব ছেলের জীবনেই অনেক মেয়ে থাকে। তা আমি যে এখন কথা বলতেছি, সেই অনেক মেয়ের মধ্যে কোন এক মেয়ে যে ধরেন মা বোন বা বান্ধবী না, এই সময় ফোন করতে পারে না? রাগ করবে না “নির্জন ইজ অন এনাদার কল” দেখে?”, বলল ফাহমিদা।

নির্জন হাসলো। বলল, “ছিলো। কাল পর্যন্ত ছিলো। আজ আর নেই!”

“মানে? আজই ব্রেকাপ হইছে নাকি?”

“হ্যাঁ। ঐ যে বললাম, ঝামেলায় ছিলাম, তাই যাইনি। এজন্যেই যাইনি।”

কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে ফাহমিদা জিজ্ঞেস করল, “তা ব্রেকাপ হলো কেন?”

আবারও স্বভাবসুলভ হেসে নির্জন বলল, “যে কারণে হয়! অকারণে!”

“অকারণে আবার ব্রেকাপ হয় নাকি?”

“হয়। আমার হয়। আজই হলো। তার নাকি গতকাল জন্মদিন ছিলো। আমি উইশ করি নাই, গিফট দেই নাই। এইসব কারণে ব্রেকাপ!” xhoti golpo

“জন্মদিন ভুলে যাওয়াটা আপনার অকারণ মনে হইলো? এমন বিএফ আমার থাকলেও আমি ব্রেকাপ করতাম!”

“আমার কাছে মনে হচ্ছে অকারণ। তাকে চিনিই দেড় মাস ধরে। দেখা হইছে মাত্র তিনচার বার। তার জন্মদিন মনে থাকবে কীকরে? আমার বাপের জন্মদিন পর্যন্ত মনে নাই, আর কোথাকার কোন মেয়ে তিনদিন হলো এসেছে আমার জীবনে, তার জন্মদিন আমাকে মনে রাখতে হবে!”

“ধ্যাৎ, এটা কেমন কথা! একটা মেয়ের সাথে প্রেম করবেন, তার জন্মদিন মনে রাখবেন না?”

“কেন রাখব? সে জন্ম নেয়ায় কী এমন লাভ হয়েছে পৃথিবীর? আমার জন্মদিনই বা কেন কেউ মনে রাখবে? কী করেছি আমরা মনে রাখার মতো? আমাদের জন্ম না হলেও দুনিয়ার কিছু হতো না, নিয়েও কিছু হচ্ছে না। না না নিয়ে হচ্ছে। আমি জন্ম নিছি বলে আমি সিগারেট খাচ্ছি, প্লাস্টিকের বোতলে পানি খাচ্ছি, বাইক চালাচ্ছি, ট্রেনে বাসে চড়ছি, কাঠ পুড়িয়ে রান্না হচ্ছে আমার জন্যে। এসব তো পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর, তাই না? আমার জন্ম হওয়ায় পৃথিবীর লাভ না হলেও ক্ষতি ঠিকই হচ্ছে!” xhoti golpo

ফাহমিদা বলল, “আরে বাপরে, এতো ছোট কথার এতো বিশাল উত্তর! আপনি সবসময় এমন বড় বড় কথা বলেন?”

নির্জন বললো, “বলি না সাধারণত। আজ বলছি আরকি। ঘটনাটা আজই ঘটল তো!”

ফাহমিদা বলল, “আর জোড়া লাগার কোন উপায় নাই?”

নির্জন বলল, “আপনি চান নাকি জোড়া লাগুক?”

“না, সেটা বলছি না। এমনিই জিজ্ঞেস করছি।”

“না, নেই। অনেক খারাপ খারাপ কথা বলেছি। গালাগালি করেছি। সেও আমাকে যথেষ্ট খারাপ ভাষায়, খুব ব্যক্তিগত ব্যাপারে আক্রমণ করছে। আর কোনভাবেই সম্ভব না জোড়া লাগা!”

“ও!”

নির্জন আরেকটু বড় জবাব আশা করেছিলো। বলল, “শুধু ও?” xhoti golpo

“হুম ও। আচ্ছা, তোমার কী মনে হইছিলো সেদিন?”

“কোনদিন?” জিজ্ঞেস করলো নির্জন।

“আরে গত সপ্তাহে! আমাকে তো দেখছো। এখন পারবে চিনতে?”

“পারবো বোধহয়! তবে কিনা আমাকে যদি চেনাতেই চান, তবে মুখ দেখাচ্ছেন না কেন?”

হাসলো ফাহমিদা। বলল, “দেখবেন একদিন। সমস্যা নাই। এতো তাড়া কীসের?”

“তাড়া নাই। তবে হাঁটার স্টাইল দেখে, চলন বলন দেখে, আর ইয়ে পেছন দিকে, সরি, বলতে বাধ্য হচ্ছি, মানে যাকে বলে, নিতম্ব দেখে, কাউকে চেনাটা একটু কষ্টকরই বটে!”

“নিতম্ব? এটা আবার কী? কাউকে তো এইটা বলতে শুনিনাই কোনদিন!”

“সত্যিই শোনেননি? আমি তো হরহামেশাই মানুষকে নিতম্ব বলতে শুনি। তবে শব্দটা সচরাচর ব্যবহৃত হয় না!”

“সে যাই হোক। মানেটা কী এর?” xhoti golpo

হাসি খেলে গেলো নির্জনের মুখে। বলল, “নিতম্বের ইংরেজিটা হলো বাটক। আর সহজ বাংলায় বললে হয় পাছা!”

খিলখিল হাসিতে কানটা ভরে গেলো নির্জনের। হাসি থামলে ফাহমিদা বলল, “আপনি আমার পাছা দেখে চেনার চেষ্টা করতেছেন? আপনার সেই বান্ধবীকেও আপনি সেভাবে চিনতেন নাকি?”

“না”, বলল নির্জন। “তবে ওর ফিগার আমার জানা আছে। আর চিনিও তো অনেক দিন ধরে। আপনাকে তো সেভাবে চিনি না। সেজন্যেই!”

“আর সামনে থেকে কী দেখে চেনেন? পিছনে না হয় বুঝলাম!”

“চিনি না তো। চেনার চেষ্টা করছি আরকি। আগে তো কোন বোরখাপরা মেয়ের আমাকে বলে নাই মুখ না দেখিয়েই চিনতে!”

“ও আচ্ছা। তা আমিই না হয় বলছি। কী দেখে চিনার চেষ্টা করছেন আমাকে? চোখ?”

খেলতে চাইলো নির্জন। তাই বললো, “চোখ তো দেখেছিই। তবে আর যা দেখেছি, তা বললে আপনি আমাকে অসভ্য বলবেন!” xhoti golpo

“মানেটা কী? আপনি কী বলতে চাইলেন, আমি বুঝছি। আপনি আমার ওসবও দেখছেন?”

“দেখুন, ফাহমিদা, আমি গৌতম বুদ্ধ নই। চোখ তো চলে যেতেই পারে!”

“বুঝি বুঝি। সব পুরুষ এক। যতোই ভালো মনে করি না কেন, শকুনের মতো ওদের চোখ ঐসব জায়গায় যাবেই!”

নির্জন বললো, “তাতে দোষের কী? প্রকৃতির নিয়ম। ফুল যখন প্রজনন ক্ষমতার অধিকারী হয় তখন সবচেয়ে রঙিন রূপ ধারণ করে যাতে ভ্রমর এসে বসে, পাখিদের গায়ে নতুন পালক গজায়, পাখিরা নাচ দেখায় বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষণ করতে। মানুষও তো পশুই। তাদের দেহের পরিবর্তন আসে যৌন সক্ষমতা প্রকাশের জন্য। সেদিকে পুরুষের নজর গেলেই দোষ? আর যতই ঢেকে রাখার চেষ্টা করেন না কেন, প্রকাশিত হবেই!”

ফাহমিদা হেসে বলল, “মানুষ পশু? তাইলে সবাই ন্যাংটা হয়ে বেড়াক?”

নির্জন হেসে বলল, “তাতে আমার আপত্তি নাই। বরং শতভাগ না সহস্রভাগ সমর্থন আছে!” xhoti golpo

“আপনার কথা নারীবাদীদের মতো। খালি ভোগের ধান্দা!”

নির্জন বলল, “নারীবিদ্বেষী ধার্মিকেরাও তো কম ভোগ করে না। বরং বেশিই করে। একেকজন চারটা করে বিয়ে করে। এইতো একশো বছর আগেও কুলীন ব্রাহ্মণেরা ৬০ টা ৭০টা করে বিয়ে করতো। নারীবাদীরা জোর করে নয়, বাধ্য করে নয়, যদি নারীদের মুক্ত করে, তাদেরও আনন্দ দিয়ে ভোগ করতে চাইলেই দোষ? এতো হিপোক্রেসি কোথায় রাখেন আপনারা?”

ফাহমিদা বলল, “আপনার সাথে আমি কথা পারবো না। বাদ্দেন। আপনার রুম্মেট বিরক্ত হচ্ছে না? রাত জেগে কথা বলছেন যে?”

“না। বাড়ি গেছে। ও ব্যাটা বিয়ে করেছে। মাসে ৪ বার বাড়ি যায়!”

“হা হা। সেটাই। বাড়ি যাওয়াই উচিত!”

নির্জন কথা থামিয়ে একটা সিগারেট জ্বাললো।

কিছুক্ষিণ একথা ওকথার পর ফাহমিদা জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা, সেদিন আমাকে দেখে আপনার কী মনে হইছে? বললেন না তো!”

“বলব?”

“হ্যাঁ!” xhoti golpo

“সেক্সি!”

“খালি অসভ্য কথা বলেন!”

“আপনিই শুনতে চাইলেন। আমি বলতে চাই নাই!”

“হুম তা ঠিক।”

নির্জন বলল, “শুধু সেক্সি না। চরম সেক্সি মনে হইছে!”

“আজাইরা। কোনদিন না। আপনি বাড়ায় কইতেছেন!”

“বাড়ায় কচ্ছি না। আপনার কানে কচ্ছি! আপনার ঐ জিনিসটা নাই!”

আবার খিলখিল হাসি।

“আপনি না সত্যিই অসভ্য। আচ্ছা, আপনি এক্সাক্টলি কী দেখছেন বলেন তো?” xhoti golpo

নির্জনের কিছুদিন আগে ভাইরাল হওয়া “ছিঃ ছিঃ! অসভ্য! আচ্ছা তারপর?” মিমটার কথা মনে পড়লো।

(চলবে)

মতামত জানাতে- [email protected]

কেমন লাগলো গল্পটি ?

ভোট দিতে হার্ট এর ওপর ক্লিক করুন

সার্বিক ফলাফল 4.5 / 5. মোট ভোটঃ 28

কেও এখনো ভোট দেয় নি

1 thought on “xhoti golpo পল্টনের ল কলেজ ২”

Leave a Comment